‘সেই কথাগুলো যখন মনে পড়ে চোখের জল আটকাতে পারিনা’

0
851

বিনোদন প্রতিবেদক:

ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা অপু বিশ্বাস। এক সময় চলচ্চিত্রাঙ্গন দাপিয়ে বেড়ালেও এখন সময় কম দিচ্ছেন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সংসার নিয়েই এখন তার ব্যস্ততা বেশি।আজ বিশ্ব মা দিবস। সেটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মায়ের দীর্ঘ জীবন সংগ্রাম, কঠোর পরিশ্রম আর মহানুভবতা নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন ঢালিউড অভিনেত্রী।

তিনি লিখেছেন, ‘মা’ ছোট্ট একটি শব্দ, অথচ কতোই না মধুময়! মায়ের কোনো সংজ্ঞা হয় না, উদাহরণ হয় না, তুলনা তো হয়-ই না। একটি কথা বলি, এই যে করোনার দুর্যোগ যাচ্ছে, এর মধ্যেও মা আমার কেয়ার নেন। সচেতন করেন। আমি মায়ের কণ্ঠে স্পষ্ট উদ্বেগ বুঝতে পারি। এই বুঝতে পারা সম্ভব হতো না, আমি যদি নিজে মা না হতাম।

সন্তানের প্রতি মায়ের মমত্ব আমি জয় হওয়ার পরেই বুঝতে পারি। মা যেমন আমার ভালো চাইতেন, সমস্ত কষ্ট থেকে আগলে রাখতে চাইতেন, আজ আমিও জয়কে সেভাবেই আগলে রাখি, বা রাখতে চাই। একটা ঘটনা বলি, আমি আর জয় একসঙ্গে ঘুমাই। সিজারিয়ান বেবি হওয়ার কারণে রুম ফ্রিজিং করে ঘুমাতে হয়। একটা সময় দেখা যায় ওর ঠান্ডা লেগে যায়। রাতে কখনো কখনো দেখি মাথা গুঁজে হাতটা সামনে দিয়ে ঘুমিয়ে আছে জয়। দেখে আমার মা, আমার কাজিনরা বলেন, ‘অপুর বাবুটা ঢং করে ঘুমিয়ে আছে!’ কিন্তু আমি বুঝি বাবুর ঠান্ডা লাগছে। ওর যখনই ঠান্ডা লাগে তখনই এভাবে ঘুমায়। আমি ‘মা’ বলেই এখন এটা বুঝতে পারি। দিন যত যাচ্ছে আরো বেশি করে বুঝতে পারছি আমার জীবনে মায়ের অবদান কতখানি!

অনেকেই হয়তো জনেন না, মায়ের সম্মতি না থাকলে আমি আজ ‘অপু বিশ্বাস’ হতে পারতাম না। কারণ আমি সিনেমায় অভিনয় করি পরিবারের কেউ চায়নি। শুধু মা চেয়েছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমার সঙ্গে ঢাকা এসে থাকা, শুটিং স্পটে দিনের পর দিন সঙ্গ দেওয়া- এগুলো বলে শেষ করা যাবে না। অথচ ছেলেবেলায় মায়ের কতোই না অবাধ্য হয়েছি।

আজ এগুলো যখন মনে পড়ে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা আরো নুয়ে আসে। মেয়েদের জীবনের সবচেয়ে বড় যে বিয়ের সিদ্ধান্ত, সেই সিদ্ধান্তও একদিন আমি নিজে নিয়েছিলাম। আমার পরিবার মেনে নেয়নি। তখনও মা আমার পাশে থেকেছেন। আমার মুখে হাসি দেখার জন্য আমার হয়ে পরিবারের সবাইকে বুঝিয়েছেন। এখন কথাগুলো যখন মনে পড়ে চোখের জল আটকে রাখতে পারি না।

মাকে নিয়ে বলতে গেলে দিনের পর দিন কেটে যাবে। কোনটা রেখে কোনটা বলবো? আমার সব আবদার তার কাছেই ছিল। আজও মা আমার শেষ আশ্রয়। আমি জয়ের মুখের দিকে যখন তাকাই, ওর ভবিষ্যৎ ভাবনা যখন ভাবি, তখন মনে হয়, আমার মা-ও একদিন আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে ঠিক এভাবেই হয়তো ভেবেছেন। তিনিও চেয়েছেন, আমি দশজনের একজন হই, দিকে দিকে আমার নাম ছড়িয়ে পড়ুক। সন্তানের গৌরবেই মায়ের গর্ব। আমার গর্ব আমার মা। মায়ের জন্য শত কোটি প্রণাম বিশ্ব মা দিবসে।