মানবতার ফেরিওয়ালা চিত্রনায়ক জায়েদ খান

0
1458

এম.ডি নাঈম হোসেন:

সারা পৃথিবীতেই করোনাকালের ঈদ প্রকৃতপক্ষে ঘরে থাকার ঈদ হিসাবেই গন্য করা হচ্ছে যার যার সচেতনতা ও আবেগের জায়গা থেকে।এই পরিস্থিতি’তে অনেকেই নিজ থেকে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে অন্যতম চিত্রনায়ক জায়েদ খান।

ঈদ-উল-ফিতরে চিত্রজগতের মুখোমুখি হয়েছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারন সম্পাদক জায়েদ খান-

চিত্রজগত – আপনাকে অভিনেতা বলব না নেতা বলব?

জায়েদ খান- আমি প্রথমে অভিনেতা তাঁর পরে নেতা। আমি অভিনেতা শব্দটা বেশি পছন্দ করি , কারন অভিনয় করতে এসেছিলাম ভালোবেসে,সখে। এখন দায়িত্ব কাঁধে পরার পরে নেতা হয়েছি। দুইটাই শুনতে ভালো লাগে । আমাকে যদি বলা হয় প্রথমে আমি অভিনেতা শব্দটা পছন্দ করব…।

চিত্রজগত – আপনাকে সব সময় মানবতার কল্যাণে কাজ করতে দেখা যায় তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আর কি কি পরিকল্পনা রয়েছে।

জায়েদ খান- আসলে মনবতার কাজ আমি ছোট বেলা থেকেই করতে পছন্দ করি। এই কাজ গুলো করতে আমি ইনজয় করি, কারো বিপদ দেখে দৌড়ে যাই, কারোর বিপদ দেখলে পাশে গিয়ে দাঁড়ায়, এইটা আমার জন্মগত স্বভাব,পরিকল্পনা করে তো আর কিছু হয় না খুব ইচ্ছা আছে মানুষের জন্য কিছু করার ,আমার তো আর অনক বেশি সামর্থ্য নাই তবে আমার যা সাধ্য আছে সেই সাধ্যের মধ্যে কিছু করার চেষ্টা করি আমি।এবং আমি মনে করি যে একটু কল্যাণও যদি কারো জন্য করতে পারি সেটা হয় তো অনেক বেশি কণ্যানকর হবে করোর জন্য।
তবে পরিকল্পনা আছে অনেক কিছুর,বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো,যারা কর্মহীন পারলে তাদের কে কাজ দেওয়া, যাদের মুখে খাবার নেই তাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়া এইসব পরিকল্পনা আর কি!এক কথায় মানুষ গুলোকে ভাল রাখতে চাই।

চিত্রজগত – বাংলা সিনেমার ইতিহাসে প্রথম ঈদে কোন সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না আপনার অনুভুতি ব্যাক্ত করুন।

জায়েদ খান- ঈদের সিনেমা মুক্তি পাবে না এটা নিয়ে আমি বেশি চিন্তিত না। করন মানুষের জীবন যেখানে থমকে গেছে সেখানে সিনেমা দিয়ে কি হবে। আর অনুভুতি হচ্ছে অনেক খারাপ ।স্বাভাবিক ভাবে ঈদে সিনেমা মুক্তি পেতো কত গুলো শিল্পী কলাকুশলী তাদের টাকা পয়সা পেতো। হল মালিকরা ভালো ব্যবসা করত। তাদের লাভ হতো, যে প্রযোজক সে ঈদের সিনেমার টাকা তুলতে পারতো আবার সিনেমা বানাতো শিল্পী কলাকুশলীরা ব্যস্ত থাকত আবার আর একটা সিনেমা নিয়ে। করোনার জন্য তো আর হচ্ছে না এটা অনেক দু:খজনক কষ্ট দায়ক ।আমি বলব সব কিছু আগে স্বাভাবিক হোক,মানুষ বেচে থাকুক, সুন্দরজীবিকা হোক।

চিত্রজগত- করোনা মহামারি গেলে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আপনার ভাবনা কি?

জায়েদ খান- করোনা মহামারি গেলে আগে ভাবনা হচ্ছে সরকারের সাথে বসতে হবে, টাকা বরাদ্দ এনে ইন্ডাস্ট্রিকে বাচিয়ে তুলতে হবে।সরকারী অনুদানের ছবি বাড়াতে হবে। টাকা দিয়ে হল গুলোকে সংস্কার করতে হবে। এ খাতে টাকা দরকার অনেক যেটার জন্য সরকারের সহযোগিতা আবশ্যক ।ইন্ডাস্ট্রির সকল সংগঠন কে নিয়ে কাজ করতে হবে এক হয়ে। তা না হলে ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়ানো অনেক কঠিন হবে।

চিত্রজগত- অভিনেতা না হলে কি হতেন ?

জায়েদ খান- অভিনেতা না হলে হয়তোবা পুলিশ অথবা আর্মি অফিসার কিছু একটা হতাম আর কি। এই দুইটার যে কোন একটা হওয়ার অনেক সখ ছিল সঙ্গে ছিলো এই পোশাক দুইটার উপর দুর্বলতা। তাঁর আগে আমার ছোট বেলায় খুব ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছা ছিলো । ঢাকা আসার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল ক্রিকেটার হবো। এক সময় ভালো ক্রিকেট খেলতাম ।

চিত্রজগত – পরিবারের সঙ্গেই ঈদ করছেন নাকি অনেকের মত এই লকডাউনে আপনিও ঢাকাতে রয়ে গেছেন?

জায়েদ খান- আমি লকডাউনে ঢাকাতেই রয়ে গেছি। প্রথম বারের মত বাবা মা ছাড়া ঈদ অনেক কষ্টের এবং আমি ফ্যামিলির ছোট ছেলে বাবা মা সকলে আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে কিন্তু যেতে পারলাম না । আমার বাবা মা পিরোজপুর এ আছেন। তারাও হোম করেন্টিনে আছেন। আমি গিয়ে তাদের রিস্ক এ ফেল্লাম না বা এখানে এনেও রিস্ক এ ফেল্লাম না।ঈদে বাবা মা কে মিস করছি অনেক।

চিত্রজগত- আপনি পিরোজপুরের ছেলে আপনাকে কি আমরা সংসদ নির্বাচনে পাব ?

জায়েদ খান- হ্যাঁ আমি পিরোজপুরের ছেলে তবে আমার সংসদ নির্বাচন নিয়ে মাথা-ব্যাথা নাই। এখন মানুষ আমার কর্মকান্ড দেখে মনে করছে আমি হয়তো সংসদ নির্বাচনে আসবো তবে আমার ছোট বেলা থেকে রাজনীতি মন থেকে টানে নি । যখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম তখন নজরুল ইসলাম বাবু ভাই (ছাত্রলীগের সাবেক সেন্টাল সেক্রেটারি , বর্তমান এম পি ) সব সময়ই বলতেন রাজনীতি কর। আমি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ছিলাম। আমার মন রাজনীতির দিকে যায় নি অনেক সুযাগ পেয়েও। মন গেলো অভিনয়ের দিকে অভিনয়ে আসলাম। সামনে রাজনীতিতে আসবো কিনা এখনো চিন্তা করি নি। এখন অভিনয় নিয়ে থাকতে পছন্দ করছি।

চিত্রজগত- করোনা ভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে সচেতনা বলতে কি মনে করেন আপনি?

জায়েদ খান- আসলে এই প্রশ্নের উওর দেবার কিছু দেখছি না এখন, কারন কিছু লোক ছাড়া কেউই সচেতন না। দিন দিন আক্রান্ত রোগীর এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে আর আমাদের সচেতনা একদমই কমে গেছে।আমাকে যদি বলা হয় তাহলে আমি আগের সেই একই কথাই বলবো সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে, ঘরে থাকতে হবে,নিজে সচেতন থাকতে হবে কথা একটাই Stay Home Stay Safe That’s My Message.