আমার মেয়ের খুশিই আমার খুশি : বাঁধন

0
996

করোনা ভাইরাস আতঙ্ক এখন বিশ্বজুড়ে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। আক্রান্ত হয়ে মারাও যাচ্ছে প্রতিদিন। করোনা থেকে বাঁচতে সরকার জনসমাগমস্থল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। এখন পুরো বাংলাদেশেই করোনার আতঙ্ক।

করোনা মোকাবিলা করতে দেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ অনেক অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে অনেক আগেই। করোনার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের শোবিজ অঙ্গনেও। ইতিমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে সব ধরনের শুটিং। পাশাপাশি তারকারাও করোনা নিয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য নানা পোস্ট দিচ্ছেন তাদের ফেসবুকে।

করোনায় কেমন সময় কাটছে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের। জানতে চাইলে তিনি বলেন করোনার দিনগুলো তিনি ঘরে বসেই কাটাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ঘরের টুকটাক কাজ যেমন রান্না করা, বাসা ক্লিন করা ইত্যাদি করেই সময় কাটছে। পাশাপাশি যেহেতু জিম বন্ধ তাই ঘরেই মেয়েকে নিয়ে শরীরচর্চা করছি। আমার সাথে যেহেতু বাবা-মা থাকে, সো তাই বাবা-মার সাথেও বেশ সুন্দর সময় কাটছে৷

নিজের পরিবারের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে বাসার ছাদে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি মিরপুরে থাকি। এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাবটা বেশি। তাই ঘর থেকে নিজে ও কাউকে বের হতে দিচ্ছি না। এমন কি বেশ কিছু দিন ধরে ছাদেই যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।

বাঁধন বলেন, আমাদের দেশের এই অবস্থায় ঘরে থাকাটাই উত্তম। আসলে ঘরে থাকাটা যত সহজ মনে হয় ততটা সহজ নয়। কিন্তু তবুও থাকতে হবে কারণ আমাদের নিজেকে ভালো রাখতে হবে, ফ্যামিলিকে ভালো রাখতে হবে, মোট কথা দেশকে ভালো রাখতে হবে।

এই অভিনেত্রী আরও বলেন, করোনা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমারা আসলে অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছিলাম। নিজদের নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম৷ কিন্তু না শুধু নিজেকে নিয়েই থাকাটা জীবন নয়৷ আমাদের পরিবার, আশেপাশের মানুষ, সমাজ, প্রকৃতি সব কিছু নিয়েই বাচতে হবে।

এই করোনায় সোশ্যাল মিডিয়াতে এক্টিভিটি বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি সাধারণত তেমন ভাবে ফেসবুক লাইভ করি না। তবে এই করোনায় আমার সোশ্যাল এক্টিভিটি বেড়েছে। ইন্সটাগ্রাম ও রিং আইডি থেকে প্রায়ই লাইভে যাচ্ছি। অনেকের সাথেই এই করোনার কারণে দেখা হচ্ছে না অনেকদিন। তাই লাইভের মাধ্যমে তাদের সাথে আড্ডাও হচ্ছে আর দেশের মানুষকে সচেতনও করা হচ্ছে।

এসময় এই লাক্সতারকা আরো যোগ করে বলেন, ইদানীং দেখা যাচ্ছে কেউ ফেসবুকে সময় কাটানোর জন্য কিছু করলে সেটি নিয়ে নানা সমালোচনা করে অনেকেই। আমার মনে হয় এই সময় অপরাধ মূলক কাজ ব্যতীত সব কিছুই করতে পারবে সবাই। এই সমালোচনা বাদ দিয়ে করোনার এই দিন গুলোতে নিজেদের আত্মশুদ্ধির করে নিতে পারি।

ঈদ নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এইবারের ঈদ বলতে কিছু নেই। কারণ সবাই এখন ঘরে বন্দি। ঘরে বসেই এইবার আমার মা,বাবা আর আর মেয়ের সাথেই ঈদ কাটাবো। এমনকি ঈদে আমরা কেউ কোন কাপড়ো কিনি নি।

ঈদের স্মৃতি চারন করতে গিয়ে এই লাক্স তারকা বলেন, আগে ছোট বেলার ঈদ বেশ মজার ছিলো। এখন চাইলেও তা সম্ভব না। তবে এখন আমার মেয়েকে নিয়েই আমার সব। ওর খুশি আমার খুশি।

ঈদে যাকাতের প্রসংগ টেনে তিনি বলেন, আমাদের যাদের উপর যাকাত ফর‍য তাদের সবার উচিত যাকাত দেয়া। আমিও প্রতিবার দেই। তবে আমার মনে হয় অল্প অল্প করে অনেককে না দিয়ে দরিদ্র একজনকে দেয়া ভালো। তাতে সে হয়তো ঐ টাকা দিয়ে কিছু করতে পারবে।

বর্তমান কাজের ব্যস্ততা নিয়ে তিনি বলেন, কিছু দিন আগে আমার একটি ছবির কাজ শেষ করলাম। আরো বেশ কিছু কাজের কথা চলছে। পাশাপাশি ঘরে বসে ‘ডাভ বাংলাদেশ’এর একটি প্রযেক্টের সাথে যুক্ত হয়েছি। যেখানে একজন মানুষের শারীরিক, মানসিক শক্তি বাড়ানো সহ নানা বিষয়ে অনলাইনেই কাজ করা হয়।

 

এদিকে কিছু দিন আগে, বাঁধন সবাইকে সচেতন করতে অল্প দামে হ্যান্ড ওয়াশ তৈরির কৌশল শিখালেন। স্বাভাবিক কারণে বাজারে এখন হ্যান্ড ওয়াশের চাহিদা বেড়েছে। এ চাহিদা পূরণের জন্য তার ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় স্বল্প খরচে হ্যান্ড ওয়াশ তৈরির পরামর্শ দিয়েছিলেন এ অভিনেত্রী। এই হ্যান্ড ওয়াশ তৈরী নিয়ে আইসিডিডিআরবির দীর্ঘ ১০ বছর গবেষণা করেছেন। সম্প্রতি তারা এই গবেষণায় সফল হয়েছেন এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন থেকে ক্লিয়ারেন্স পেয়েছেন।

মাত্র পাঁচ টাকায় বাসায় বসেই হ্যান্ড ওয়াশ তৈরির কৌশল দেখিয়েছেন বাঁধন। এ অভিনেত্রীকে এটা তৈরির পুরো প্রক্রিয়া শিখিয়েছেন তার বন্ধু নুহু আমিন। তিনি আইসিডিডিআরবি-তে অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।