আজ কিংবদন্তী শাবানার জন্মদিন

297
1721

যিনি সে সময় বিউটি কুইন শাবানা হিসেবেও দর্শকহৃদয় জয় করেছিলেন।
আফরোজা সুলতানা রত্না । শাবানা হিসাবেই অধিক জনপ্রিয়; জন্ম ১৫ জুন ১৯৫২। একজন বাংলাদেশী কিংবদন্তী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

১৯৬২ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে নতুন সুর চলচ্চিত্রে তার চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে। পরে ১৯৬৭ সালে চকোরী চলচ্চিত্রে চিত্রনায়ক নাদিমের বিপরীতে প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। শাবানার প্রকৃত নাম রত্না। চিত্র পরিচালক এহতেশাম চকোরী চলচ্চিত্রে তার শাবানা নাম প্রদান করেন। তার পূর্ণ নাম আফরোজা সুলতানা। পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে।তিনি তার ৩৬ বছর কর্মজীবনে ২৯৯টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ষাট থেকে নব্বই দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন এই অভিনেত্রী। ২০০০ সালে রূপালী জগৎ থেকে নিজেকে আড়াল করে ফেলেন এ নায়িকা। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি অভিনয়ের জন্য ৯ বার ও প্রযোজক হিসেবে ১ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৭ সালে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন।শাবানার চলচ্চিত্র কর্মজীবনের সূচনা হয় শিশু শিল্পী হিসেবে নতুন সুর চলচ্চিত্র দিয়ে। তিনি ২৯৯টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার মধ্যে ১৩০টি চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে ছিলেন আলমগীর।

১৯৬২ -১৯৬৯: অভিনয়ের প্রারম্ভসম্পাদনা

চলচ্চিত্রকার এহতেশামের হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। এহতেশাম পরিচালিত নতুন সুর চলচ্চিত্রে তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রে এহতেশামের সহকারী ছিলেন আজিজুর রহমান। তিনি তাকে স্ক্রিপ্ট মুখস্ত, সংলাপ প্রদান, ও ক্যামেরার সামনে দাড়ানোর তালিম দেন।
শিশুশিল্পী হিসেবে তিনি ইবনে মিজান পরিচালিত আবার বনবাসে রূপবান (১৯৬৬) এবং পার্শ্বচরিত্রে মুস্তাফিজ পরিচালিত ডাক বাবু (১৯৬৬) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরের বছর ১৯৬৭ সালে এহতেশাম পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র চকোরী-তে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। এই চলচ্চিত্রে পরিচালক এহতেশামই তার ‘রত্না’ নাম বদলে শাবানা রাখেন।

১৯৭০-১৯৭৯: জনপ্রিয়তা ও প্রযোজনাসম্পাদনা

১৯৭০ এর দশকের শুরুতে শাবানা কাজী জহির পরিচালিত মধু মিলন (১৯৭০) ও অবুজ মন (১৯৭২) এই ২টি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি রাজ্জাকের সাথে জুটি গড়ে তোলেন। ১৯৭০ সালে তিনি শোর লখনভী পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র চান্দ সুরজ এবং মোস্তাফিজ পরিচালিত একই অঙ্গে এত রূপ ও কাজী মেসবাহউদ্দীন পরিচালিত ছদ্মবেশী ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৭২ সালে তার অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলো হল এস এম শফির ছন্দ হারিয়ে গেল, নাজমুল হুদার চৌধুরী বাড়ি এবং আজিজুর রহমানের সমাধান ও স্বীকৃতি। এই বছর তিনি মাসুদ পারভেজের প্রযোজনায় চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ওরা ১১ জন (১৯৭২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

পরের বছর তিনি আজিজুর রহমান পরিচালিত অতিথি ও সি বি জামান পরিচালিত ঝড়ের পাখি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৭৭ সালে সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া পরিচালিত জননী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার মাধ্যমেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রত্যাখ্যানে রীতি শুরু হয়। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা শাবানা ১৯৭৯ সালে প্রযোজকের খাতায় নাম লেখান। ১৯৭৯ সালে তার স্বামী ওয়াহিদ সাদিককে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন এস এস প্রডাকশন্স এবং নির্মাণ করেন মাটির ঘর চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেন আজিজুর রহমান এবং এতে শাবানার বিপরীতে অভিনয় করেন তৎকালীন আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা রাজ্জাক।আশির দশকে শাবানা বেশ কিছু ব্যবসাসফল ও অসাধারণ চলচ্চিত্র দর্শকদের উপহার দেন। ১৯৮০ সালে আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত সখী তুমি কার এবং আজিজুর রহমান পরিচালিত শেষ উত্তর ও ছুটির ঘণ্টা চলচ্চিত্রগুলো তাকে সুখ্যাতি এনে দেয়। রোম্যান্টিক-নাট্যধর্মী সখী তুমি কার চলচ্চিত্রে রাজ্জাক ও ফারুকের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথমবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

শাবানা ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার যথাক্রমে দুই পয়সার আলতা (১৯৮২), নাজমা (১৯৮৩) ও ভাত দে (১৯৮৪) চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। আমজাদ হোসেন পরিচালিত দুই পয়সার আলতা চলচ্চিত্রে চাচার সংসারে পালিত পিতামাতাহীন এক মেয়ে কুসুম চরিত্রে অভিনয় করেন। সুভাষ দত্ত পরিচালিত নাজমা চলচ্চিত্রে স্বামীর সংসার থেকে নিগৃহীত নাজমা রহমান চরিত্রে অভিনয় করেন। আমজাদ হোসেন পরিচালিত ভাত দে চলচ্চিত্রে দরিদ্র বাউলের কন্যা জরি চরিত্রে অভিনয় করেন। এসময়ে তার অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রসমূহ হল কামাল আহমেদ পরিচালিত রজনীগন্ধা (১৯৮২), লালু ভুলু (১৯৮৩), ও মা ও ছেলে (১৯৮৫), মতিন রহমান পরিচালিত লাল কাজল (১৯৮২), মমতাজ আলী পরিচালিত নালিশ (১৯৮২), মালেক আফসারী পরিচালিত ঘরের বউ (১৯৮৩), আমজাদ হোসেন পরিচালিত সখিনার যুদ্ধ (১৯৮৪), ও শেখ নজরুল ইসলাম পরিচালিত নতুন পৃথিবী। এছাড়া তিনি হিম্মতওয়ালী (১৯৮৪), বাসেরা (১৯৮৪), ও হালচাল উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

১৯৮৬ সালে শাবানা নায়করাজ রাজ্জাক পরিচালিত চাঁপা ডাঙ্গার বউ, এ জে মিন্টু পরিচালিত অশান্তি বাংলা চলচ্চিত্র এবং প্রমোদ চক্রবর্তী পরিচালিত শত্রু শিরোনামেত একটি হিন্দি চলচ্চিত্রে রাজেশ খান্নার বিপরীতে অভিনয় করেন। পরের বছর সুভাষ দত্ত পরিচালিত স্বামী স্ত্রী, দিলীপ বিশ্বাস পরিচালিত অপেক্ষা, বুলবুল আহমেদ পরিচালিত রাজলক্ষী শ্রীকান্ত, এ জে মিন্টু পরিচালিত লালু মাস্তান, জহিরুল হক পরিচালিত সারেন্ডার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অপেক্ষা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি পঞ্চমবারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৮৯ সালে তিনি মতিন রহমান পরিচালিত রাঙা ভাবী, কামাল আহমেদ পরিচালিত ব্যাথার দান, ও এ জে মিন্টু পরিচালিত সত্য মিথ্যা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। রাঙা ভাবী ছবিটি তার নিজের প্রযোজনা সংস্থা থেকে নির্মিত। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন আলমগীর ও শিশু শিল্পী তাপ্পু। শাবানা স্বামী পরিত্যক্ত নারী রোকেয়া চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেন।
১৯৯০ সালে তিনি আজহারুল ইসলাম খান পরিচালিত মরণের পরে, কামাল আহমেদ পরিচালিত গরীবের বউ ও স্বপন সাহা পরিচালিত ভাই ভাই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। বিয়োগাত্মক মরণের পরে চলচ্চিত্রে শাবানা ছয় সন্তানের জননী সাথী চরিত্রে অভিনয় করেন। প্রথমদিকে হাসিখুশি শাবানা হঠাৎ পাল্টে যাওয়া চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেন।

১৯৯১ সালে তিনি শিবলি সাদিক পরিচালিত অচেনা, শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত টপ রংবাজ, এ জে মিন্টু পরিচালিত পিতা মাতা সন্তান, কাজী মোরশেদ পরিচালিত সান্ত্বনা, শেখ নজরুল ইসলাম পরিচালিত স্ত্রীর পাওনা এবং নজরুল ইসলাম পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র আন্ধি-এ অভিনয় করেন। শাবানা ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত পুনরায় টানা তিনবার যথাক্রমে রাঙা ভাবী (১৯৮৯), মরণের পরে (১৯৯০) ও অচেনা (১৯৯১) চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন এবং ১৯৯০ সালের গরীবের বউ চলচ্চিত্র প্রযোজনার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র প্রযোজক পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯২-১৯৯৭: অভিনয়ের ইতিসম্পাদনা

১৯৯০ এর দশকের প্রথম দিকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করলেও শেষের দিকে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। প্রধান চরিত্রে মতিন রহমান পরিচালিত অন্ধ বিশ্বাস (১৯৯২), মালেক আফসারী পরিচালিত ক্ষমা মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন পরিচালিত লহ্মীর সংসার (১৯৯২), কামাল আহমেদ পরিচালিত অবুঝ সন্তান (১৯৯৩), শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ঘাতক (১৯৯৪) ও মাসুদ পারভেজ পরিচালিত ঘরের শত্রু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তার পার্শ্বচরিত্রে অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে স্নেহ (১৯৯৪), কন্যাদান (১৯৯৫), সত্যের মৃত্যু নাই (১৯৯৬), স্বামী কেন আসামী (১৯৯৭) উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৭ সালে তিনি হঠাৎ করেই অভিনয়ের ইতি ঠানেন। তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র আজিজুর রহমান পরিচালিত ঘরে ঘরে যুদ্ধ ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায়। এরপর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে তার পরিবারের কাছে চলে যান এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

শাবানা মোট ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। তার অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে আছে ১৯৯১ সালে প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, ১৯৮২ ও ১৯৮৭ সালে বাচসাস পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে নাট্যসভা পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে কামরুল হাসান পুরস্কার, ১৯৮২ সালে নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে ললিতকলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সায়েন্স ক্লাব পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে কথক একাডেমী পুরস্কার এবং ঐ বছরই জাতীয় যুব সংগঠন পুরস্কার।
এছাড়াও শাবানা মস্কো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, রুমানিয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালসহ আরো বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন।

লেখা:এবি.এম.সোহেল রশিদ

297 COMMENTS

  1. clomid 25 mg testosterone Methods Randomised controlled trial Participants Infertile women with mild to moderate endometriosis n 104 post laparoscopic surgery Inclusion criteria at least 12 months with asymptomatic primary infertility, regular menstruation, aged between 23 and 37 years with normal BMI.

  2. Scientific data gathered during animal research, suggest that inhibition of PDE-5 may improve signs and symptoms of Erectile Dysfunction, Benign Prostatic Hyperplasia, and other Lower Urinary Tract Symptoms can i buy priligy in mexico If your child has not been found eligible for this program, the first step would be to apply for it

  3. priligy equivalent However, despite the lower per-pill prices at conventional pharmacies, ordering online from eDrugstore can save you time and money when you take into consideration all that you get for your money

  4. Pazar günü iki şirket tarafından yapılan açıklamada eczane zinciri CVS’in ABD’deki en büyük üçüncü sigorta şirketi olan Aetna’yı 69 milay.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here